
শ্যামনগর প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার উপকূলীয় জনপদ শ্যামনগরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর বিশাল কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৩শে ফেব্রুয়ারী রবিবার সকালের মহিলা ও বিকালে কর্মী সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হয়, যেখানে সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে হাজারো নেতাকর্মী সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন।
সকাল ৯ টা থেকে শুরু হয় মহিলা কর্মী সম্মেলন। ঔপ্টশ্যামনগরের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হাজার হাজার নারী কর্মী উপস্থিত হন। তারা জামায়াতের আদর্শ ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে নিজেদের আরও বেশি সম্পৃক্ত করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
দুপুরের পর থেকে বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো নেতা-কর্মীদের ঢল নামে, যা সমাবেশকে এক অভূতপূর্ব জনসমুদ্রে পরিণত করে। বিকাল পর্যন্ত চলা এই সমাবেশে পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “ আওয়ামীলীগের প্রধান মিশন ছিল এ দেশ থেকে ইসলাম নির্মুল করা। জামায়াতের ১১ নেতাকে তারা হত্যা করেছে। জামায়াতের নেতাদের হত্যা করে ইসলামি আন্দোলন শেষ করা যায় না। তার প্রমান শ্যামনগরের এই বিশাল কর্মী সমাবেশ।
শেখ হাসিনা থেকে রাজনীতিবিদদের শিক্ষা নেওয়ার দরকার আছে। ক্ষমতা চিরদিন থাকেনা, হাসিনা মামার বাড়ি পালিয়ে গেছে। আমরা ক্ষমতায় যেতে পারলে শাসক হবো না সেবক হবো।
তিনি ড: ইউনুস সরকারকে উদ্দেশ্যে বলেন, খুনি আওয়ামীলীগ এবং তাদের দোষরদের সকলকে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। শাপলা চত্ত্বরে কত মানুষকে তারা নিহত করেছে তা জাতী এখনো জানতে পারিনি। এই খুনিদের বিচারের মাধ্যমে শাস্তি দিতে হবে।
প্রধান অতিথি আরোও বলেন, জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তি দাবীতে হবে। তা না হলে আপনারা ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না।
উপজেলা আমীর মাওলানা আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্যাহ, মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী, অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম মুকুল, সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম, মাওঃ আজিজুর রহমান, শেখ নুরুল হুদা, মাহবুবুল হক, প্রভাষক ওমর ফারুক সহ কেন্দ্রীয়, জেলা ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। তারা সবাই জামায়াতের ভবিষ্যৎ লক্ষ্য ও কর্মপন্থা তুলে ধরেন এবং সংগঠনের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার আহ্বান জানান।
বক্তারা শ্যামনগর উপজেলার উন্নয়নের রূপরেখা তুলে ধরেন এবং সরকারের কাছে তা বাংলার শ্রেষ্ঠ দাবি জানান। তারা বলেন, “শ্যামনগর উপজেলার অবহেলিত মানুষদের উন্নয়নে সরকারকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এই অঞ্চলকে মডেল উপজেলায় রূপান্তর করার জন্য জামায়াত নিরলসভাবে কাজ করে যাবে।”
নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেন, এই কর্মী সম্মেলনের মাধ্যমে দলের কর্মীরা নতুন উদ্দীপনায় কাজ করতে অনুপ্রাণিত হবেন। হাজার হাজার কর্মীর সরব উপস্থিতি এবং উদ্দীপনা দেখে নেতারা অত্যন্ত আশাবাদী যে, সংগঠনের সাংগঠনিক কাঠামো আরও শক্তিশালী হবে এবং জনগণের পাশে থেকে তাদের অধিকার আদায়ে কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।