অনলাইন ডেস্ক:
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার তিন সপ্তাহ পর প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়ে বসছেন।
শনিবার বিকাল তিনটায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এই মতবিনিময় শুরু হবে বলে প্রধান উপদেষ্টা দপ্তরের প্রেস উইংয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
রাত ৮টা পর্যন্ত কয়েকটি দল ও জোটের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার আলাদা আলাদাভাবে কথা বলার সূচি রয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে মতবিনিময়ের আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়টি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নিশ্চিত করেছেন কয়েকটি দলের নেতারা।
এর মধ্যে রয়েছে, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, বাংলাদেশ জাসদ, ১২ দলীয় জোট, গণফোরাম ও জাতীয় পার্টি।
বিকাল তিনটায় শুরু হবে খেলাফত মজলিসের দুই অংশের সঙ্গে প্রথম মতবিনিময় সভা।
খেলাফত মজলিসের নেতৃত্ব দেবেন দলটির আমীর মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ। প্রতিনিধি দলে থাকবেন আহমাদ আবদুল কাদের, সাখাওয়াত হোসেন, জাহাঙ্গীর হোসেন ও মুনতাসীর আলী।
বাংলাদেশ খেলাফত সজলিসের নেতৃত্ব দেবেন ইউসুফ আশরাফ। প্রতিনিধি দলে থাকবেন মামুনুল হক ও জালাল উদ্দিন।
গণফোরামের নেতৃত্ব দেবেন ড. কামাল হোসেন। তার সঙ্গে মোস্তফা মহসীন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, এসএম আলতাফ হোসেন, মিজানুর রহমান, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মহিব উদ্দিন আবদুল কাদের ও মোশতাক আহমেদের থাকার কথা রয়েছে।
অলি আহমেদের নেতৃত্বে এলডিপির প্রতিনিধি দলে রেদোয়ান আহমেদ, নেয়ামূল বশির, নুরুল আলম তালুকদার ও আওরঙ্গজেব বেলাল থাকতে পারেন বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।
জাতীয় পার্টিরর নেতৃত্বে দেবেন জিএম কাদের। তার প্রতিনিধি দলে থাকতে পারেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ চৌধুরী, মজিবুর রহমান চুন্নু, মাশরুর মওলা ও সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন।
জাতীয়বাদী সমমনা জোটের নেতৃত্বে দেবেন এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।
এই জোটের শরিক জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, গণদলের এটিএম গোলাম মওলা চৌধুরী, এনডিপির আবু তাহের, বাংলাদেশ ন্যাপের শাওন সাদেকি, সাম্যবাদী দলের সৈয়দ নুরুল ইসলাম মতবিনিময়ে অংশ নেবেন বলে জানা গেছে।
১২ দলীয় জোটের নেতৃত্বে দেবেন জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার।
এই জোটের দলে জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, বিএলডিপির শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহিউদ্দিন ইকরাম, লেবার পার্টির একাংশের ফারুক রহমান, জাগপা একাংশের তাসমিয়া প্রধান, কল্যাণ পার্টির শামসুদ্দিন পারভেজ ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের শাহ আহমেদ বাদল থাকতে পারেন।
বাংলাদেশ জাসদের নেতৃত্ব দেবেন শরীফ নুরুল আম্বিয়া। তার সঙ্গে নাজমুল হক প্রধান, মুশতাক হোসেন, আবদুল কাদের হাওলাদার, কাজী সদরুল হকের থাকার কথা রয়েছে।
দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের সংস্কারসহ নির্বাচনের বিষয় নিয়ে তাদের মতামত প্রধান উপদেষ্টাকে জানাবেন।
পরিবেশ ও বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, “আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনার প্রক্রিয়া চালু রাখব, তাদের কাছ থেকে সংস্কার প্রস্তাব যা আসবে সেগুলো গ্রহণ করব। সে ব্যাপারে একটা পদ্ধতির বিষয়ে কথা হয়েছে।”
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের তিনদিন পর ৮ অগাস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব বুঝে নেয় মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন উপদেষ্টা পরিষদ। আওয়ামী লীগকে বাদ রেখে অন্যান্য দল ও সেনাবাহিনী আলোচনা করে এই সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে এই সরকারকে স্বাগত জানানো হলেও গত ২৪ অগাস্ট থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন প্রশ্নে ‘অতি দ্রুত’ সংলাপের দাবি জানাচ্ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার মির্জা ফখরুলের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।
সাক্ষাৎ শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পর্যায়ক্রমে উপদেষ্টা মতবিনিময় করবেন।”
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে গত ১২ আগস্ট মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপি, শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামী, শাহ আলমের নেতৃত্বে সিপিবি, মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বে গণতন্ত্র মঞ্চ, আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বে বিজেপি, সৈয়দ ফয়জুল করীমের নেতৃত্বে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর নেতৃত্বে এবি পার্টি, নুরুল হক নূরের নেতৃত্বে গণঅধিকার পরিষদ, হারুন চৌধুরীর নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, ববি হাজ্জাজের নেতৃত্বে এনডিএম আলাদাভাবে মতবিনিময় করে।