অন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
সুইজারল্যান্ড ও ভারতের মধ্যে দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি (ডাবল ট্যাক্স অ্যাভয়ডেন্স অ্যাগ্রিমেন্ট বা ডিটিএএ) বিদ্যমান, যার উদ্দেশ্য হলো সুইজারল্যান্ডে কাজ করা ভারতীয় ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে একই আয়ের জন্য দুই দেশে কর দিতে বাধ্য না করা। এই চুক্তি প্রথম স্বাক্ষরিত হয় ১৯৯৪ সালে এবং পরে ২০১০ সালে সংশোধিত হয়। চুক্তিটি উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও সুবিধা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মূলত, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের একটি রায় দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি (ডিটিএএ) কার্যকর করতে নতুন বাধা তৈরি করে। ওই মামলায় সুইজারল্যান্ডভিত্তিক কোম্পানি নেসলে একটি পক্ষ ছিল। ভারতীয় শীর্ষ আদালত রায়ে জানায়, ভারতীয় আয়কর আইনের ৯০(১) ধারা অনুযায়ী, সরকারের প্রজ্ঞাপন ছাড়া কোনো দ্বৈত কর নিরসন চুক্তি কার্যকর হতে পারে না।
এরপর, সুইজারল্যান্ডের ফাইন্যান্স বিভাগ গত বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ঘোষণা দেয়, তারা ভারতকে প্রজ্ঞাপন ছাড়া আর ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’ (এমএফএন) সুবিধা দেবে না। ফলে, আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ভারতের জন্য এমএফএন সুবিধা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বছরের মার্চে আইসল্যান্ড, লিচটেনস্টেইন, নরওয়ে এবং সুইজারল্যান্ডের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ইএফটিএ) স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির আওতায় আগামী ১৫ বছরে ভারতে ১০ হাজার কোটি বা ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দেশগুলো। তবে সুইজারল্যান্ডের সাম্প্রতিক পদক্ষেপের কারণে এই সম্ভাব্য বিনিয়োগ ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে সুইস সরকারের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জানতে চাইলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘আমার ধারণা, ইএফটিএ-এর কারণে আমাদের দ্বৈত কর পরিহার চুক্তি পুনরায় আলোচনা করা হবে। এটি একটি দিক। অন্যটি হলো মোস্ট ফেভারড নেশন। এ বিষয়ে আপাতত আমার কাছে কোনো আপডেট নেই। আমরা পরে বিস্তারিত জানাব।’