সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শ্যামনগরে ভাই হত্যার বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন নূরনগর ইউনিয়ন আমীরের শপথ মজলিশে শূরা নির্বাচন ও কর্ম পরিষদ গঠন জামায়াতে ইসলামীর রমজাননগর ইউনিয়ন আমিরের শপথ ও টিম গঠন শ্যামনগরে ইসলামী আন্দোলনের গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত  ৫ আগষ্টে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া পিস্তল পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং ডিসি কর্তৃক গালাগাল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন শ্যামনগরে ক্যারিয়ার ক্যাম্প জব কোচিং-এ চাকরি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা শনিবার মৌলভীবাজারে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন   সাতক্ষীরা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কালো ব্যাজ ধারণ ও প্রতিবাদ সভা মাছের উৎপাদন বৃদ্বিতে সুন্দরবনে প্রকল্প হাতে নিয়েছে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর

মুসলমাদের ঐক্যই সকল সমস্যার সমাধান

রিপোটার এর নামঃ ৪৮ ভিউ
আপডেটঃ শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২:৪৯ পূর্বাহ্ন

ইসলামি ডেস্কঃ

বর্তমান পৃথিবীতে মুসলমানের সংখ্যা প্রায় দুইশো কোটি। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই কমবেশি মুসলমানের বসবাস আছে। তারমধ্য ৫৭টিই মুসলিম প্রধান দেশ। তারমধ্যে আবার পারমাণবিক শক্তিধর দেশও কয়েকটি আছে। বাকিগুলো যে কম শক্তিশালী তাও কিন্তু নয়। কোনো কোনো মুসলিম রাষ্ট্রের সেনাবাহিনী উল্লেখযোগ্য পর্যায়ে পৃথিবীতে খ্যাত। জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বারবার সেরা খেতাব পাচ্ছে।

তুলনামূলকভাবে মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর অবস্থান পৃথিবীর সুবিধাজনক স্থানে। কোনো কোনো রাষ্ট্রের পথ ধরেই ইউরোপ আমেরিকার গমনপথ। আবার এমনও রাষ্ট্র আছে, যার সুদৃষ্টি ছাড়া অমুসলিম রাষ্ট্রগুলোর মোড়লপনার সুযোগ নেই। বললে অত্যুক্তি হবে না যে, ক্ষতিপয় মুনাফিক মুসলিম রাষ্ট্র-ই শত্রুর পা; যার উপর ঠিকে আছে সমস্ত জুলুমবাজি। যদিও কিছু কিছু রাষ্ট্র দারিদ্র্য পীড়িত কিন্তু সার্বিকভাবে মুসলমানদের অবস্থা মোটেও খারাপ হওয়ার কথা নয়। এক আরবের ২১টি দেশের সম্পদই পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য শক্তি। মুসলমানদের এত এত সুবিধা ও সম্পদ থাকা সত্ত্বেও এত বড় বিপর্যয় কেনো?

৭ই অক্টোবরে গাজার ইস্যুটি নতুন করে সামনে আসার পর মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর অনৈক্য, দুর্নীতি, স্বৈরাচারিতা ও স্বার্থপরতা সবার চোখে ভাসছে। ইসরায়েলের দীর্ঘ ৭০ বছরের জুলুম নিপীড়নের পরও ফিলিস্তিনের পক্ষে কোনো মুসলিম রাষ্ট্র কোনোপ্রকার ভূমিকা রাখতে পারে নি। ৭ই অক্টোবর হামাসের হামলার পর আমেরিকা রণতরীসহ নানা সাহায্য নিয়ে ছুটে এসেছে ইসরায়েলে। অনেক দেশের সরকারও দূর থেকে বা স্বয়ং ইসরায়েলে গিয়ে তাদের ধ্বংসযজ্ঞে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছে। বিভিন্ন দেশ থেকেও সেনারা ইসরায়েলের হয়ে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে অসহায়, নিরুপায় ও বিপর্যস্ত গাজায়। এর ভিতরে কোনো মুসলিম রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের জন্য তেমন কোনো ভূমিকা-ই রাখতে পারে নি। অথচ ইসরায়েল ও আমেরিকা যে বিমান ও ট্যাংক দিয়ে এই হত্যাকা- চালাচ্ছে তা-ও অপর আরেক মুসলিম রাষ্ট্রের খনিজ থেকে উত্তলিত তেলে চলছে। মিশরের সরকার আরো কৌশল বাতলে দিচ্ছে হামাসকে কিভাবে সমূলে ধ্বংস করা যায়! দিনদিন মুসলিম উম্মাহর দুর্দশা বেড়েই চলেছে। অথচ পড়শী মুসলিম রাষ্ট্রগুলো নীরব দর্শকের ভূমিকায় আছে। তাদের ভিতরে একটুও ভাবান্তর ঘটছে না। মুসলমানদের পারস্পরিক ঐক্য হচ্ছে ফরজ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা সবাই আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না।’ (সূরা আলে ইমরাম:১০৩) আল্লাহর আদেশ অমান্য করে মুসলমানরা আজ সবচেয়ে বেশি বিক্ষিপ্ত, বিচ্ছিন্ন।

উনবিংশ শতাব্দী থেকে মুসলিম উম্মাহ পাল ছাড়া ভেড়ার মত হয়ে গেছে। অতীতে যেকোনো স্থানে মুসলিম অঞ্চল আক্রান্ত হলে নানান প্রান্ত থেকে মুসলমানরা সাহায্যের জন্য ছুটে আসত। এর নিষ্পত্তি বা উল্লেখযোগ্য সমাধান ছাড়া ক্ষান্ত হত না। আমরা দেখতে পারি ক্রুসেড বা হিংস্র তাতারদের ইতিহাস। তাদের কেউ উম্মাহর প্রতিরোধের সামনে টিকতে পারে নি। কিন্তু বর্তমানে?

উসমানী সাম্রাজ্যের পতনের মধ্য দিয়ে যে চিড় মুসলিম উম্মাহর ভাগ্যে ঘটেছে, তা দিনদিন গভীর থেকে গভীর হচ্ছে। জাতিসংঘ তৈরি হয়েছে ঠিকই কিন্তু মুসলমানদের রক্তঝরা বাড়ছে বৈ কমছে না। মুসলমানদের কল্যাণে মুসলিম রাষ্ট্রগুলো মিলে তৈরি করেছিল ওআইসি। কিন্তু নানা ঘাটতি ও ঐক্যের অভাবে তারা আজও কোনো ভূমিকা রাখতে পারে নি। রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে নিয়ে সেই রক্তাক্ত গাজা পর্যন্ত প্রতিটি স্থানেই মুসলমানদের সবচেয়ে বড় যে দুর্বলতাটি ধরা পড়েছে, তা হল ঐক্যের ঘাটতি। প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্রই তার নিজের স্বার্থ ও কল্যাণের বাইরে টু শব্দ পর্যন্ত করতে নারাজ। নইলে ৫৭টি মুসলিম রাষ্ট্রের জোড়ালো প্রতিবাদের মুখে বিশ্বের যেকোনো বিষয় নিষ্পত্তি পর্যন্ত যেতে বাধ্য থাকত। অথবা আরবের রাষ্ট্রগুলো তেল রপ্তানিতে কঠিনতা আরোপ করলেও এর সুরাহা আশা করা যেত। মোটকথা মুসলিম উম্মাহর সব আছে। যেটা নেই সেটার জন্যই এই দুর্গতি। আর সেটা হল ঐক্য।

মহানবী হজরত মুহাম্মদ সাঃ এই দুর্গতির দিকে ইঙ্গিত করে সাড়ে চৌদ্দশত বছর আগেই বলেছিলেন, ‘অনতিদূরে সকল বিজাতি তোমাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হবে, যেমন ভোজনকারীরা ভোজপাত্রের উপর একত্রিত হয়। (এবং চারদিক থেকে ভোজন করে থাকে।) একজন বলল, আমরা কি তখন সংখ্যায় কম থাকব, হে আল্লাহর রসূল? তিনি বললেন, বরং তখন তোমরা সংখ্যায় অনেক থাকবে। কিন্তু তোমরা হবে তরঙ্গতাড়িত আবর্জনার ন্যায় (শক্তিহীন, মূল্যহীন)। আল্লাহ তোমাদের শত্রুদের বক্ষ থেকে তোমাদের প্রতি ভীতি তুলে নেবেন এবং তোমাদের হৃদয়ে দুর্বলতা সঞ্চার করবেন। একজন বলল, হে আল্লাহর রসূল! দুর্বলতা কী? তিনি বললেন, দুনিয়াকে ভালোবাসা এবং মরতে না চাওয়া।’ (আবূ দাঊদ ৪২৯৯, মুসনাদে আহমাদ ২২৩৯৭)


এই বিভাগের আরো খবর