মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শ্যামনগরে ভাই হত্যার বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন নূরনগর ইউনিয়ন আমীরের শপথ মজলিশে শূরা নির্বাচন ও কর্ম পরিষদ গঠন জামায়াতে ইসলামীর রমজাননগর ইউনিয়ন আমিরের শপথ ও টিম গঠন শ্যামনগরে ইসলামী আন্দোলনের গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত  ৫ আগষ্টে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া পিস্তল পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং ডিসি কর্তৃক গালাগাল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন শ্যামনগরে ক্যারিয়ার ক্যাম্প জব কোচিং-এ চাকরি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা শনিবার মৌলভীবাজারে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন   সাতক্ষীরা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কালো ব্যাজ ধারণ ও প্রতিবাদ সভা মাছের উৎপাদন বৃদ্বিতে সুন্দরবনে প্রকল্প হাতে নিয়েছে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর

শ্যামনগরে ব্যাতিক্রমী খোটা শাকের মেলা

রিপোটার এর নামঃ ২১ ভিউ
আপডেটঃ মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২৪, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

 

মারুফ হোসেন (মিলন)
শ্যামনগর(সাতক্ষীরা)প্রতিনিধিঃ
ঝোপ-ঝাড়, আনাচে-কানাচে, ডোবা-নালায়, খাল-বিলে বিভিন্নি ধরনরে প্রাণী ও উদ্ভিদ থাকে। তার মধ্যে অচাষকৃত এসকল উদ্ভিদ বৈচিত্র্য অন্যতম। এসকল উদ্ভিদ বৈচিত্র্য যেমন খাদ্য ও ঔষধী হিসাবে ব্যবহার হয় তেমনি তা আবার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধারক।বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন, লবনাক্ততা, রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের ব্যবহার, অবেহলা এবং উৎপত্তি স্থল ধ্বংসের কারণে এগুলো বিলুপ্ত হচ্ছে। এগুলো টিকিয়ে রাখতে সরকারী-বেসরকারী ভাবে বিভিন্ন সময়ে নানান ধরনের উদ্যোগ ও কর্মসুচি পরিচালিত হচ্ছে।
সে লক্ষ্যে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সিক্সটিন ডেজ অব গ্লোবাল অ্যাকশন অন এগ্রোইকোলজি ২০২৪ ও বিশ্ব গ্রামীণ নারী দিবসকে সামনে রেখে প্রকৃতি সংরক্ষণের মাধ্যমে গ্রামীণ উন্নয়ন ও খাদ্য নিরাত্তায় অচাষকৃত উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের ভূমিকা এবং উৎপত্তি স্থল টিকিয়ে রাখাতে শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম জেলেখালী গ্রামের স্থানীয় জনগোষ্টীর উদ্যোগ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক’র সহায়তায় ব্যতিক্রমী খোটা শাকের মেলা অনুষ্টিত হয়। মেলায় কৃষক-কৃষানী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, যুব, সাংবাদিক, সুশিল সমাজের প্রতিনিধি, স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহন করেন।
মেলায় পশ্চিম জেলেখালী গ্রামের ৩ পাড়ার ১৯ জন গ্রামীণ নারী তাদের এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে থানকুনি, কলমি, হেলাঞ্চ, গাদোমনি, সেঞ্চি, বউনুটে, বুড়িপান, আমরুল,কাটানুটে, ঘুমশাক, নিশিন্দা, বিশার্লাকরনী, মনিরাজ, ধুতরা, ডুমুর, পেপুল, ঘেটকুল, লজ্বাবতী, শাপলা, কালোকচু, লালকচু, জিবলী, সেজি, বাসক, এলোভেরা, কলার মোচা, ষষ্টিবট,শিষ বট, কলার থোড়, শালুক, নাটা, দুধশাক, দুর্বা, তুলসি ইত্যাদি সহ ১২৬ ধরনের অচাষকৃত উদ্ভিদ সংগ্রহ করে নিয়ে প্রদর্শনী করেন। প্রদর্শনীতে এ সকল উদ্ভিদের প্রাপ্তিস্থান, গুণাবলী, ব্যবহার, কোন মৌসুমে বেশি পাওয়া যায়, কোনটি কি দিয়ে রান্না করা হয়, কোনটি মানুষ ও প্রানীর ঔষধ হিসাবে ব্যবহার হয় এসব বিষয় তুলে ধরেন প্রদর্শনকারীরা।
মেলায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, ‘ উপকুলীয় এলাকায় প্রতিনিয়ত নানান ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলা করে ঠিকে থাকতে হয়। আর দুর্যোগের ফলে এলাকা থেকে নানান ধরনের উদ্ভিদ বৈচিত্র্য বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। সাথে উৎপত্তির যে স্তল ছিলো সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এগুলো টিকিয়ে রাখতে হবে তার জন্য আমাদের সচেতন হতে হবে। আমাদের নতুন প্রজন্মের মাঝে এগুলোর ব্যবহার বৃদ্ধির করতে হবে। আজ আমরা এক উদ্ভিদবৈচিত্র্য দেখতে পেলাম। আমাদের পরিবার থেকে শুরু করে জাতীয় পর্যায়ে প্রাণবৈচিত্র্যের উৎস গুলো টিকিয়ে রাখতে আন্দোলন করতে হবে। তার জন্য সকলের সহযোগিতা দরকার।’
মেলায় অতিথিরা বলেন বলেন, এটি একটি ভিন্ন মেলা।আমাদের উদ্ভিদ বৈচিত্র্য ও উৎপত্তি স্থল টিকিয়ে রাখতে এরকম মেলা আরো বেশি বেশি করে আয়োজন করা দরকার। যাতে সকলেই সচেতন হয় এবং সংরক্ষণে ভূমিকা রাখে। নারী পুরষের সমান অধিকার প্রতিষ্টা হোক সেটা খাবার থেকে শুরু করে সকল স্থরে।
মেলায় এককভাবে ১২৬ ধরনরে উদ্ভিদ প্রদর্শনী করে ১ম স্থান অধিকার করেন চম্পা মাঝী। ১২৫ টি প্রদর্শনী করে ২য় স্থান অধিকার করেন কৃষানী অনিতা গাঁতিদার । ১১০ টি প্রদর্শন করে ৩য় স্থান অধিকার করেন ডলি নস্কর।
খোটা শাকের মেলায় অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি দেবাশিষ মন্ডল ও নীপা চক্রবর্তী, উপসহকারী মৃনাল কান্তি মন্ডল, কৃষক ভুধর চন্দ্র মন্ডল, যুব স্বেচ্ছাসেবক গৌতম সরদার, কৃষানী পূর্ণিমা রানী, লতা রাবী, শিক্ষার্থী জবা, বারসিকের সহযোগী আঞ্চলিক সমন্বয় কারী রামকৃষ্ণ জোয়ারদার বিশ্বজিৎ মন্ডল প্রমুখ।


এই বিভাগের আরো খবর