অনলাইন ডেস্কঃ
১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় দৈনিক মানব জমিনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্যামনগর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম দুলুসহ সংগঠনটির তিন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ভুক্তভোগীরা এমন অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের রেকর্ড প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।
প্রতিবেদনটি হবহু তুলে ধরা হলো:
ভুক্তভোগীরা জানান, মৎস্য ঘের দখল, চাঁদাবাজি, লুটপাট করেছেন দুলু বাহিনী। দুলুর অপকর্মের সহযোগী হলেন উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আনারুল ইসলাম আঙ্গুর এবং সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ নাজমুল হকসহ আরও ১০-১৫ জন। দুলু ও আঙ্গুরের কারণেই শ্যামনগর যুবদলের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর শ্যামনগরে যুবদলের অফিসের নামে একটি দোকান খোলেন দুলু ও তার বাহিনী। সেখানে বিচারক হিসেবে বসেন দুলু, আঙ্গুর এবং নাজমুল। প্রতিদিনই তাদের দোকানে চলে নানা তদবির ও দেন-দরবার।
জনস্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মুস্তাফিজুর রহমান জানান, এক সপ্তাহ আগে দুলু ১০-১৫ জন সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে আমার অফিসে আসেন। চলমান কাজগুলো বন্ধ করার হুমকি দেন। কাজ বন্ধের জন্য ইউএনও মহোদয়কে জানানোর জন্য বললে তিনি উত্তর দেন, আপনি কি কোটায় চাকরি পেয়েছেন, আওয়ামী লীগের তাঁবেদারি করেন, আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এসেছেন? আমার দিকে তেড়ে আসেন। আপনার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করবো, আপনাকে এখান থেকে বিতাড়িত করবো। আমার অফিসে আসা মক্কেল এবং ঠিকাদারের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। আমাকে বলেন, আপনি কাজ-কাম সবকিছু করতে পারবেন যদি আমাকে ১০০ পানির ট্যাংকের তালিকা করতে দেন এবং সঙ্গে টাকা দেন।
ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) আইনুল হক জানান, গত বৃহস্পতিবার যুবদল নেতা দুলু অফিসে ঢুকে আমাকে বলেন, আপনি আমাকে চেনেন, আমি যুবদলের আহ্বায়ক। আমরা ১৫-১৬ বছর বাইরে ছিলাম এখন দলের অফিস করবো। তাই এর সকল কার্যক্রমের খরচ আপনাকে দিতে হবে। অন্যদের কাছ থেকে নিয়েছি ১ লাখ টাকা, আপনি কাছের মানুষ তাই ৫০ হাজার টাকা দিবেন। আমি বললাম- এত টাকা আমি কোথা থেকে দিবো আমার দেয়ার সক্ষমতা নাই। তিনি আমাকে শাসিয়ে বলেন আমি অত-শত বুঝি না টাকা দেয়া লাগবে। চাকরি করতে হলে টাকা দিতে হবে আপনার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করবো, আপনাকে বিতাড়িত করবো। শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন লিটন জানান, আমার স্কুল নিয়ে একটি সমস্যা রয়েছে। আমার প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র করে দুলু ভাইয়ের সঙ্গে যোগসাজশ করে আমাকে স্কুল থেকে বদলির পাঁয়তারা করছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য দুলু ভাইকে বললে তিনি আমার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। টাকা দিলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে থাকতে পারবো, না দিলে পারবো না জানান তিনি।
এদিকে যুবদলে পদ দেয়ার কথা বলে আব্দুল মান্নানের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকার মাছ নিয়েছেন দুলু। একইভাবে গোলাম মাহমুদের কাছ থেকে পদ দেয়ার কথা বলে নিয়েছেন ৮ হাজার টাকা। একজন মহিলার কাছে ট্যাংকি দেয়ার নাম করে নিয়েছেন ২৮ হাজার টাকা। বাবলু চক্রবর্তীর মোবাইল সামগ্রীর দোকান, হাবিবের রং এর দোকান এবং হাফিজুল ইসলামের ইলেকট্রনিক্সের দোকানে তালা মেরে দেন তারা। পরবর্তীতে স্থানীয়রা তালা ভেঙে দোকান মালিকদের হস্তান্তর করেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে শ্যামনগর যুবদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম দুলু ঘটনার আংশিক সত্যতা স্বীকার করেন। কিন্তু বাকি অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেন তিনি।
শ্যামনগর উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মাস্টার আব্দুল ওয়াহেদ জানান, নির্দিষ্ট করে কেউ আমার কাছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়নি। তবে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের কথা আমার কানে এসেছে বলে স্বীকার করেন।
সম্পাদক : মাহমুদুল ফিরোজ বাবুল, মোবাঃ +8801712-256830, ই-মেইল : mahmudulfiroz6830@gmail.com, অফিসঃ এফ এম মার্কেট(তয় তলা), শ্যামনগর, সাতক্ষীরা।
সর্বস্ত্ব সংরক্ষত © শ্যামনগর বার্তা ২০২৪ ॥ ডিজাইনার : মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম