অনলাইন ডেস্ক:
সাবেক পররষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাছান মাহমুদের ভাই এরশাদ মাহমুদের দখলে থাকা আরও ১০০ একর বন ভূমি উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
এ নিয়ে টানা চারদিনের অভিযানে এরশাদ মাহমুদের দখলে থাকা মোট ২০০ একর বন উদ্ধার হলো।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের খুরুশিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বৃহস্পতিবার দিনভর রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নেরর খুরুশিয়া বিট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে যে ১০০ একর বনভূমি উদ্ধার করা হয়েছে তা মহিষের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহার করতেন এরশাদ মাহমুদ।
অন্য জায়গার মত এখানেও পাহাড়ি ছড়ার পানি আটকে বিশাল একটি পুকুর তৈরি করে সেখানে মাছ চাষ করা হতো।
উদ্ধারের পর পুকুরের পাড় কেটে পানি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম বলেন, এরশাদ মাহমুদের লোকজন চলে যাওয়ার পর স্থানীয়রা সেখানে ১০টি টিনের চালাঘর বেঁধে নতুন করে দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল।
“অভিযানে সবগুলো ঘর উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদ করা জায়গায় নতুন করে বনায়ন করা হবে।”
বন বিভাগ বলছে, শুধু খুরুশিয়া রেঞ্জের চারটি বন বিটের অধীনে এরশাদ মাহমুদ প্রায় ২১২ একর জমি দখল করেছিলেন। ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে এসব জমি দখল করে খামার, পুকুর, বাগান, রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন স্থাপনা গড়ে তোলা হয়।
বুধবার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের দুধপুকুরিয়া বিট এলাকা থেকে প্রায় ৩০ একর বনের জমি উদ্ধার করা হয়। এসব জমি দখলে নিয়ে মালটা ও কাজু বাদামের বাগান গড়ে তোলা হয়। পাহাড়ি ছড়ার পানি আটকে তৈরি করা হয় বিশাল পুকুর।
তার আগে মঙ্গলবার রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের সুখবিলাস গ্রামে অভিযান চালিয়ে এরশাদ মাহমুদের দখলে থাকা ১৫ একর জমি উদ্ধার করেছিল বন বিভাগ।
আর সোমবার অভিযানের প্রথম দিন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পদুয়া ইউনিয়নের সুখবিলাস গ্রামে ৫০ একর জমি উদ্ধার করে বন বিভাগ। সেখানে বনভূমি দখল করে গয়াল পালনের জন্য ছয়টি ঘর তৈরি করেছিলেন এরশাদ মাহমুদ।
পাশাপাশি রাঙ্গামাটি-বান্দরবান সড়কের পাশে দশমাইল এলাকায় বন বিভাগের ৫ একর জমি দখল করে মুক্তিযোদ্ধা পার্ক ও রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলা হয়। সেখানে তিনটি পুকুর, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক ও রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলা হয়েছিল, যা সোমবার উচ্ছেদ করে বন বিভাগ।
দীর্ঘদিন ধরে এসব জমি দখলে থাকলেও তা নিয়ে বন বিভাগ মামলা করেনি।
তবে খুরুশিয়া রেঞ্জের ২১২ একর জমি উদ্ধার করতে ২০২৩ সালে জেলা প্রশাসক বরাবর চিঠি দেওয়া হয়েছিল বলে জানান বন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম।
তিনি জানান, গত চারদিনে যেসব জমি উদ্ধার হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে মামলা করা হবে।