অনলাইন ডেস্কঃ
সরকার আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে যৌথ অভিযান শুরু করার পর এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের মেয়াদে ইস্যুকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের প্রকৃত সংখ্যা এখনো বের করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুলিশ সদর দপ্তরের ডেটাবেজ অনুসারে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২৫ আগস্ট সব অস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করায় ৩ সেপ্টেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত বেসামরিক ব্যক্তিরা ১৩ হাজার ৩৪৯টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা দিয়েছেন।
পুলিশ কর্মকর্তারা এই তথ্য জানাতে ব্যর্থ হয়েছেন যে গত ১৫ বছরে কতগুলো আগ্নেয়াস্ত্র ইস্যু করা হয়েছে।
পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) স্টুডেন্ট অ্যান্ড লেবার উইং বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ইস্যুকৃত লাইসেন্সের একটি ডেটাবেজ রক্ষণাবেক্ষণ করে।
যোগাযোগ করা হলে এসবির স্টুডেন্ট অ্যান্ড লেবার উইংয়ের স্পেশাল সুপারিনটেনডেন্ট সাঈদ রফিকুল ইসলাম জানান, ডেটাবেজ অনুযায়ী এই সময়ের মধ্যে প্রায় আট হাজার ৫০০ আগ্নেয়াস্ত্র ইস্যু করা হয়েছে।
তিনি অবশ্য বলেন, সংখ্যাটা আরও বেশি হতে পারে এবং তারা প্রকৃত সংখ্যা বের করতে কাজ করছেন।
আরও কত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে হবে তা না জানলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান পরিচালনা করা কঠিন হবে বলে সূত্র জানায়।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বেসামরিক নাগরিকদের দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করেছে বর্তমান সরকার। গত ২৫ আগস্ট এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়।
পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনকে দমন করতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা নির্বিচারে গুলি চালানোর কারণে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
নির্দিষ্ট সময়সীমা পার হওয়ার পরও যারা তাদের লাইসেন্স করা অস্ত্র জমা দেনটি, তার অস্ত্র অবৈধ বলে গণ্য হবে।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে সশস্ত্র বাহিনী, বিজিবি, কোস্টগার্ড, পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে যৌথ অভিযানে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বিভিন্ন থানা ও নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলিও উদ্ধার করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, ১০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় দিনে যৌথ অভিযানে ১১১টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫১ জনকে।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে সাতটি রিভলবার, ৩০টি পিস্তল, নয়টি রাইফেল, ১৫টি শটগান, তিনটি পাইপগান, ১৬টি শাটারগান, পাঁচটি এলজি বন্দুক, ১৫টি বন্দুক, একটি একে-৪৭টি, একটি গ্যাসগান, একটি চাইনিজ রাইফেল, একটি এয়ারগান, একটি টিয়ার গ্যাস লঞ্চার, তিনটি এসএমজি এবং তিনটি সিঙ্গেল ব্যারেল ব্রীচ লোডার।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) এনামুল হক সাগর জানান, যৌথ অভিযানে মূলত তিনটি ক্যাটাগরির আগ্নেয়াস্ত্র খোঁজা হচ্ছে। প্রথমত, যেগুলো পুলিশ, এসএসএফ ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর কাছ থেকে চুরি বা হারিয়ে গেছে, দ্বিতীয়ত লাইসেন্স স্থগিত হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র এবং তৃতীয়ত অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র।
তিনি বলেন, ‘যৌথ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’