দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক বলেছেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার বর্বরতা ভারতের নরেন্দ্র মোদিকেও ছাড়িয়ে গেছে। শেখ হাসিনার পতন বাংলাদেশের জন্য এক নতুন দুয়ার উন্মোচন করেছে। আজ বাংলাদেশ নতুনভাবে মুক্তি পেয়েছে।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দিনাজপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অভ্যুত্থানে শহিদদের রুহের মাগফেরাত, আহতদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘজীবন কামনায়, দোয়া মাহফিল এবং নৈরাজ্য প্রতিরোধ ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে মামুনুল হক বলেন, একজন মানুষের শাসনামলে এতগুলো গণহত্যার নজির আর আছে কিনা মনে হয় না। শেখ হাসিনার বর্বরতা ইসরাইলের গণহত্যার সামঞ্জস্য। একদিকে যখন ইসরাইল ফিলিস্তিনে গণহত্যা চালাচ্ছে সেই সময়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের শান্তিকামী মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি, দমনপীড়ন চালিয়েছে। অনেকেই ৫ আগস্ট বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা উদযাপন করেছে। ছাত্রভাইয়েরা যারা এই স্বাধীনতা এনে দিয়েছে তাদের সতর্ক থাকতে হবে। কারণ স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন।
তিনি আরও বলেন, ৫৫ হাজার বর্গমাইলের এ বাংলাদেশে এত সহজে আমরা স্বাধীনতা পাইনি। এই বাংলাদেশ অর্জন করতে তিন তিনটি সাম্রাজ্যবাদ আধিপত্যের শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে। ২০০ বছর পর্যন্ত ব্রিটিশ বেনিয়াদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে। পশ্চিম পাকিস্তানিদের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানিদের ভাই ভাই সম্পর্কে প্রস্তাব দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু তারা চেয়েছিল পূর্ব পাকিস্তানিরা যেন তাদেরকে প্রভু মানে। একমাত্র আল্লাহতায়ালাই এই জাহানের প্রভু। কেউ যদি আমাদেরকে দাস ভেবে প্রভুত্ব চালাতে চায় তাহলে তার উচিত জবাব দেয়া হবে। আর কেউ যদি বন্ধুসুলভ আচরণ করে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলে তাকে বন্ধুত্বের আতিথিয়তা দেয়া হবে।
মামুনুল হক আরও বলেন, শেখ হাসিনার রাজনীতি দুই নীতি বিশিষ্ট রাজনীতি ছিল। তার রাজনীতি ছিল প্রতিশোধের রাজনীতি। যে জাতি তার বাবাকে হত্যা করেছিল তাদের ওপর প্রতিশোধ নিবেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এটাই তার বক্তব্য ছিল। শেখ হাসিনা শুধু তার পরিবারের হত্যাকাণ্ডই দেখেছিল কিন্তু তার বাবার প্রতিষ্ঠিত সাড়ে তিন বছরের বাকশালের কথা তিনি ভুলে গিয়েছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় যে পরিমাণ প্রাণ হারিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী সাড়ে তিন বছরে বাকশালের সময় তার চেয়ে বেশি মায়ের কোল খালি হয়েছে। যার ফলাফল ১৫ আগস্টের অভ্যুত্থান। তার আর একটা উদ্দেশ্য হলো আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করা। তিনি পালাবেন না বলেও দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। একবারও আওয়ামী লীগের কথা ভাবেননি।
এ সময় বাংলাদেশকে একটি সুন্দর রাষ্ট্র হিসেবে গড়তে সঠিক নেতৃত্ব কায়েম করার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের দিনাজপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হযরত মাওলানা জোবায়ের সাঈদের সঞ্চালনায় সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা হাফেজ মাওলানা রেজাউল করিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালাল উদ্দিন আহমাদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মুসাসহ দলটির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।