মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:০৭ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
শ্যামনগরে ভাই হত্যার বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন নূরনগর ইউনিয়ন আমীরের শপথ মজলিশে শূরা নির্বাচন ও কর্ম পরিষদ গঠন জামায়াতে ইসলামীর রমজাননগর ইউনিয়ন আমিরের শপথ ও টিম গঠন শ্যামনগরে ইসলামী আন্দোলনের গণ সমাবেশ অনুষ্ঠিত  ৫ আগষ্টে শ্যামনগর থানা থেকে লুট হওয়া পিস্তল পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের উপর হামলা এবং ডিসি কর্তৃক গালাগাল করার প্রতিবাদে মানববন্ধন শ্যামনগরে ক্যারিয়ার ক্যাম্প জব কোচিং-এ চাকরি প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা শনিবার মৌলভীবাজারে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন   সাতক্ষীরা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের কালো ব্যাজ ধারণ ও প্রতিবাদ সভা মাছের উৎপাদন বৃদ্বিতে সুন্দরবনে প্রকল্প হাতে নিয়েছে হাওর ও জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তর

সাতক্ষীরা জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরী ট্রাক্টর ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষের আশঙ্কা

রিপোটার এর নামঃ ৪৮ ভিউ
আপডেটঃ বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৩:৩৮ অপরাহ্ন

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

সাতক্ষীরা জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরী ট্রাক্টর ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজিঃ নং-৭৬৪) এর ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন ২০২৪ উপলক্ষে নির্বাচন নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা চাউর হয়ে উঠেছে। এতে নিরুপায় হয়ে সাধারণ শ্রমিকবৃন্দ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরী ট্রাক্টর ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজিঃ নং-৭৬৪) এর ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন ২০২৪ উপলক্ষে বিগত ৩০ আগস্ট ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী একটি সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সকল সদস্যদের সম্মতিতে বিগত কমিটির বিরুদ্ধে আনীত অনাস্থা প্রস্তাব গৃহীত হয় এবং সবর্সম্মতিতে গঠনতন্ত্রের ৩২/৬ ধারা মোতাবেক মো. খবির উদ্দীনকে আহবায়ক করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। এছাড়াও শ্রমিকদের সম্মতিতে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি মো. আব্দুস সামাদকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন এবং আগামী ১০ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে সংগঠনের ত্রি-বার্ষিক সাধারণ নির্বাচনের দিন ধায্য করা হয়।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাতক্ষীরা জেলা ট্রাক, ট্যাংকলরী ট্রাক্টর ও কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি: নং খুলনা-৭৬৪) ২০১০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। ২০১০ সালের নির্বাচনে আব্দুর রকিব-কাদু কমিটি কাগজে-কলমে নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হলেও কোন নির্বাচন না দিয়ে অনুমোদিত গঠনতন্ত্রের ১৯ ধারা ও অন্যান্য ধারা উপধারা বিধিবিধান অনুসরণ না করে অগঠনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাগজে কলমে দেখানো এবং পাতানো নির্বাচন সম্পন্ন করেন। এরপর ২০১৯ সালে অগঠনতান্ত্রিক ভাবে কোন নির্বাচন না হলেও ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন সম্পন্ন দাবি করে পত্র পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করিয়েছিলেন খালেক-কাদু কমিটি। এরপরেও বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ সংশোধিত ২০১৮ এর ১৭৯ (১)(ঞ) ধারা এবং ট্রেড ইউনিয়নের গঠনতন্ত্রের ১৯ ধারা লঙ্ঘন করে উক্ত কমিটি অবৈভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এছাড়া ২০২২ সালে আবারো পূর্বের ন্যায় অবৈধভাবে কমিটি গঠনের নাটক মঞ্চস্থ করার পায়তারা চালিয়ে ক্ষ্যান্ত থাকেনি, বরং আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে তাদের মদদপুষ্ট কতিপয় সদস্য সাধারণ সভা আহবান করেছেন। উপরিউক্ত বিষয়াদি নিয়ে উভয় গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজমান।

আরও জানা গেছে, টানা ১৩ বছর ধরের অধিক সময়ে কোন নির্বাচন না দিয়ে শুধুমাত্র কাগজ-কলমে নির্বাচন দেখিয়ে ইউনিয়ন নিয়ন্ত্রণ করে আসছিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী গ্রæপের প্রভাবশালী কতিপয় নেতা। শুধুমাত্র কাগজ কলমে কমিটি দেখিয়ে দিনের পর দিন ইউনিয়ন থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন ওইসব অবৈধভাবে পদদখলকারীরা। শ্রমিকদের উন্নয়নে কোন কাজ না করেও প্রতি মাসে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও অর্থ সম্পাদকসহ কমিটির অন্যান্যরা মোটা অংকের ভাতা গ্রহণ করে যাচ্ছিলেন। এছাড়াও ভূয়া আপ্যায়ন খরচ দেখিয়ে হাজার হাজার টাকা হাতানোরও অভিযোগ ছিলো অর্থ সম্পাদকের বিরুদ্ধে। উক্ত বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে ইউনিয়নের কয়েকজন সদস্য খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়ন ও পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়েরও করেছিল।

এ ব্যাপারে সাধারণ শ্রমিক শেখ মিলন জানান, দীর্ঘদিন ইউনিয়নের নির্বাচন না দিয়ে অগঠনতান্ত্রিকভাবে কমিটি গঠন করে শ্রমিকদের অর্থ তছরূপ করে যাচ্ছিলেন আব্দুল খালেক-কাদের কাদু কমিটির নেতৃবৃন্দ। ইতোমধ্যে ইউনিয়নের ৫টি ট্রাকও বিক্রয় করেছে তারা। সম্প্রতি খালেক-কাদু কমিটির মদদপুষ্ট কতিপয় সদস্যরা পাল্টা সাধারণ সভা ডেকে শ্রমিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করিয়েছেন। উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেকোনো সময়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সৃষ্টি হতে পারে। সেটি বন্ধ করতে এখনই জেলা প্রশাসক, জেলা পুলিশ সুপার ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উদ্ধর্তন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

এ বিষয়ে কমিটির আহবায়ক মো. খবির উদ্দীন জানান, অত্র এলাকায় বর্তমানে চিহ্নিত কতিপয় সন্ত্রাসী কিছু অত্র ইউনিয়নের সদস্য ও কিছু বহিরাগতরা সীমার বাহিরে কিছু সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ড ঘটাইয়াছে। এমনকি নির্বাচন অফিসে ঢুকিয়া নির্বাচনী ফাইলপত্র তছনছ করিয়াছে। যাহার ফলে বিষয়টি সুষ্ট নির্বাচনের স্বার্থে ও পরিবেশ অনুক’লে রাখার জন্য প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। এরমধ্যে বিগত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে নির্বাচনী কার্যালয়ে ঢুকিয়া নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান ও একজন সদস্যের সহিত চরম দূর্ব্যবহার পূর্বক ইউনিয়নের ঘরের দরজা বন্ধ করিয়া জোরপূর্বক তাহাদের নিকট হইতে অগণতান্ত্রিকভাবে পদত্যাগে সহি করাইয়াছে তারা। সেকারণে আমরা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক নির্বাচন স্থগিতের জন্য বিগত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে শ্রম পরিদপ্তর খুলনা এর পরিচালককে চিঠি দিয়েছি। উক্ত ঘটনাবলি অবগত হয়ে খালেক-কাদু কমিটির মদদপুষ্ট কতিপয় সদস্যরা পাল্টা গ্রæপের কতিপয় নেতার উন্ধনে নাম প্রকাশ না করেও আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে অগঠনতান্ত্রিকভাবে কথিত সাধারণ সভা আহবান করেছেন। যাহা ট্রেড ইউনিয়নের গঠনতন্ত্রের ১৯ ধারা লঙ্ঘনের সামিল।

এ প্রসঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ বলেন, সংগঠনের সুষ্ট নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির নেতৃবৃন্দ কাজ করতে থাকেন। তিনি শ্রমিক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি হওয়ার কারণে বিগত ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে ঢাকা গমন করেন এবং সংগঠনের কাজে ঢাকায় অবস্থানকালে বিগত ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে মোবাইলের মাধ্যমে জানতে পারেন, তাহার নির্বাচনী কার্যালয়টি কিছু উত্তেজিত উশৃংঙ্খল শ্রমিক দখল করিয়া নিয়েছেন। উপরিউক্ত বিষয়কে কেন্দ্র করিয়া নির্বাচন পরিচালনা কমিটি সংগঠনের শ্রমিকদের মধ্যে প্রচন্ড উত্তেজনার পাশাপাশি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা উপলব্ধি করেছেন এবং নির্বাচনের পরিবেশ অনুপস্থিত বিরাজভাজন ভেবে নির্বাচন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত জানাইয়া আহবায়ক বরাবর পত্র প্রেরণ করেছেন। সম্প্রতি উত্তেজিত শ্রমিকদের মধ্য হইতে পাল্টা গ্রæপের কতিপয় নেতা একটি কথিত সাধারণ সভা আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে আহবান করিয়াছেন। এদিকে পূর্বে গঠিত আহবায়ক কমিটি পাল্টা গ্রুপের সাধারণ সভা প্রতিহত করার জন্য সচেষ্ট রয়েছেন। ফলে উক্ত সাধারণ সভাকে কেন্দ্র করিয়া উক্ত স্থানে সাধারণ শ্রমিক ও পাল্টা গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সম্ভাবনা বেশি লক্ষ করা যাচ্ছে। আমরা নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি। আর কোনো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ দেখতে চাই না। বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হয়েছে। আশাকরি, উক্ত সমস্যা নিরসনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কর্মকর্তারা সদয় হবেন।


এই বিভাগের আরো খবর